একটি ওয়ার্কশপের কাহিনী

ঈশ্বর মঙ্গলময়!

সমস্ত বিপদের মধ্যেও প্রাথমিক ম-লী’র মতো খ্রিস্টের বানী চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।

গত ১৭-১৯ মে ২০১৬ সালে সিরাজগঞ্জে একটি ধর্মভিত্তিক ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। এই ওয়ার্কশপে ঠাকুরগাও ও সিরাজগঞ্জ থেকে মোট ৯ জন ছাত্র অংশগ্রহণ করে। ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমরা এই তিনদিনে অনেক আশ্চর্য পরিবর্তন দেখতে পেয়েছি। অংশগ্রহণকারীরা শোনার ব্যাপারে ও নতুন বিষয় জানার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী ছিল। তাদের কার্যক্রম ও আচার আচরণে আমরা বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ করেছি।

প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে একজন বেশ বয়স্ক এবং তিনি এসেছেন ঠাকুরগাও থেকে। তার নাম সুশীল চন্দ্র সিংহ। তিনি বাড়িতে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে অনেক পড়াশোনা করেন। অনেক বিষয় জানেন। কিন্তু তার পরেও তার মনে শান্তি ছিল না।

আমাদের একজন আয়োজক প্রথম দিন তাকে স্থানীয় একটা হোটেলে খাওয়ার জন্য নিয়ে গেলেন। তিনি গিয়ে দেখলেন যে ওই হোটেলে গরুর মাংস রান্না হচ্ছে। তিনি আয়োজন ভাইটিকে বললেন, “আমি কখনো ওই হোটেলে খেতে চাই না, আর ওই হোটেল থেকে কোন খাবার আনা হলেও আমি খাব না।”

আসলে আমাদের আর কোন উপায় ছিল না। তিন দিনই আমরা ওই হোটেল থেকে খাবার এনেছি। তিনি তা জানতেন না। তো খাবার বিষয়ে প্রথম দিনেই তার এই কঠোরতা আমাদেরকে বেশ চিন্তায় ফেলেছিল। কিন্তু আমরা তার প্রতিবাদ করিনি।

ওয়ার্কশপে আমরা হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন বিষয় বলা সহ মানুষ যে ঈশ্বরের অবাধ্য হয়ে পাপ করেছে সেসব বিষয়ে বেশ আলোচনা ও দলীয় কার্যক্রম হয়েছে। সেসব কার্যক্রমে সুশীল সিংহ অনেক আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করেছেন। শেষ দিন অন্যান্য আরো ৮ জন প্রশিক্ষণার্থীর সংগে তিনিও স্বীকার করলেন যে যীশুই প্রভু এবং তিনিই আমাদের পরিত্রাণকর্তা। মুর্তি পুজা সম্পর্কে তিনি বললেন যে, “আমি কখনোই মূর্তি পুজা করতে চাই না। কারণ মূর্তি আমাকে কিছুই দিতে পারে না এবং এটা একটা মানুষের তৈরী জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছুই নয়।” ওয়ার্কশপের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি খাবার বিষয়ে অনেক প্রশ্নও করেছেন।

শেষদিন আমরা তাকে প্রস্তাব করলাম, “দাদা আমরা ওই হোটেলে রাতের খাবার খেতে যাচ্ছি, আপনি কি আমাদের সাথে যাবেন নাকি অন্য কোন হোটেল আপনার পছন্দ?” ঈশ্বরের কী অশেষ কৃপা, তিনি বললেন, “না না, এখন আর আমার খাবার সম্পর্কে কোন সমস্যা নেই, আমি আপনাদের সাথেই যাব।” ঈশ্বরের গৌরব হোক।

এবং তিনি বললেন যে এই ওয়ার্কশপ তার চোখ খুলে দিয়েছে। তিনি চান তার এলাকায় আরো হিন্দু ভাই বোন যারা তাদেরকেও এই সত্য জানানো হোক। তিনি আমাদেরকে তার গ্রামে এধরণের ওয়ার্কশপ আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করলেন।

2 thoughts on “একটি ওয়ার্কশপের কাহিনী

  1. ভালো লাগল, তার জীবনে আরো পরিবর্তন হোক এবং ক্রমে যে একজন পরিবর্তিত মানুষ হোক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।